1. admin@kagojerbarta.com : admin :
ঢাকা ০৪:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এআই তৈরি করল মানবদেহে বিষমুক্ত নতুন অ্যান্টিবায়োটিক

প্রতিনিধির নাম
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশ্বজুড়ে ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার হুমকি যখন ক্রমেই বাড়ছে, ঠিক তখনই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উদ্ভাবন করল এমন দুইটি নতুন অ্যান্টিবায়োটিক, যা মারাত্মক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া গনোরিয়া ও এমআরএসএ (মেথিসিলিন-প্রতিরোধী স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস) ধ্বংসে সক্ষম। এই যুগান্তকারী গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)।

গবেষকরা জানিয়েছেন, এই ওষুধগুলোর পরমাণু বিন্যাস সম্পূর্ণভাবে এআই দ্বারা নকশা করা হয়েছে। ল্যাবরেটরি ও প্রাণীর ওপর পরীক্ষায় এগুলো সুপারবাগ ধ্বংসে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। আগেও এআই ব্যবহার করে বিদ্যমান হাজারো রাসায়নিক উপাদান বিশ্লেষণ করা হয়েছিল, তবে এই প্রথম এআই সম্পূর্ণ নতুন অ্যান্টিবায়োটিক নকশা করেছে গনোরিয়া ও এমআরএসএ নির্মূলে।

গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জার্নাল সেল-এ। সেখানে বলা হয়, গবেষকরা প্রায় ৩.৬ কোটি রাসায়নিক যৌগ বিশ্লেষণ করেছেন, যেগুলোর অনেকই আগে কখনো তৈরি হয়নি বা আবিষ্কৃত হয়নি। এআইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন যৌগের রাসায়নিক গঠন এবং ব্যাকটেরিয়ার ওপর তাদের প্রভাব বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

দুইটি পৃথক পদ্ধতিতে কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে—

একটিতে এআই ছোট ছোট রাসায়নিক ফ্র্যাগমেন্ট থেকে ওষুধ নকশা করে।
অন্যটিতে এআই-কে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নকশা করতে দেওয়া হয়।
বিবিসি জানায়, এই নতুন অ্যান্টিবায়োটিকগুলো প্রচলিত ওষুধের মতো নয় এবং মানবদেহে বিষাক্তও নয়। আলাদাভাবে পরীক্ষা করে ল্যাবরেটরিতে ব্যাকটেরিয়ার ওপর এবং সংক্রমিত ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। বর্তমানে ওষুধ প্রতিরোধী সংক্রমণ বিশ্বজুড়ে বছরে ১০ লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যুর কারণ। অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার ব্যাকটেরিয়াকে আরও শক্তিশালী করছে, ফলে অনেক প্রচলিত ওষুধ অকার্যকর হয়ে পড়ছে।

তবে এমআইটি গবেষক দল জানিয়েছে, এই ওষুধ এখনই বাজারে আসছে না। উন্নয়ন ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করতে কয়েক বছর সময় লাগবে। তারা আশা করছেন, এই উদ্ভাবন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের ক্ষেত্রে ‘দ্বিতীয় স্বর্ণযুগ’-এর সূচনা করতে পারে।

ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ড. অ্যান্ড্রু এডওয়ার্ডস বলেন, “এই গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নতুন অ্যান্টিবায়োটিক সনাক্ত করার এক অভিনব পদ্ধতি এটি।”

তবে তিনি সতর্ক করে দেন, “এআই ওষুধ আবিষ্কার ও উন্নয়নে বিপ্লব আনলেও, ওষুধের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা যাচাইয়ের প্রচলিত কঠোর ধাপগুলো অতিক্রম করতে হবে।”

সূত্র: বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :
  • আপডেট সময় : ০৫:১৫:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫ ৫০ বার পড়া হয়েছে

এআই তৈরি করল মানবদেহে বিষমুক্ত নতুন অ্যান্টিবায়োটিক

আপডেট সময় : ০৫:১৫:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫

বিশ্বজুড়ে ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার হুমকি যখন ক্রমেই বাড়ছে, ঠিক তখনই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উদ্ভাবন করল এমন দুইটি নতুন অ্যান্টিবায়োটিক, যা মারাত্মক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া গনোরিয়া ও এমআরএসএ (মেথিসিলিন-প্রতিরোধী স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস) ধ্বংসে সক্ষম। এই যুগান্তকারী গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)।

গবেষকরা জানিয়েছেন, এই ওষুধগুলোর পরমাণু বিন্যাস সম্পূর্ণভাবে এআই দ্বারা নকশা করা হয়েছে। ল্যাবরেটরি ও প্রাণীর ওপর পরীক্ষায় এগুলো সুপারবাগ ধ্বংসে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। আগেও এআই ব্যবহার করে বিদ্যমান হাজারো রাসায়নিক উপাদান বিশ্লেষণ করা হয়েছিল, তবে এই প্রথম এআই সম্পূর্ণ নতুন অ্যান্টিবায়োটিক নকশা করেছে গনোরিয়া ও এমআরএসএ নির্মূলে।

গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জার্নাল সেল-এ। সেখানে বলা হয়, গবেষকরা প্রায় ৩.৬ কোটি রাসায়নিক যৌগ বিশ্লেষণ করেছেন, যেগুলোর অনেকই আগে কখনো তৈরি হয়নি বা আবিষ্কৃত হয়নি। এআইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন যৌগের রাসায়নিক গঠন এবং ব্যাকটেরিয়ার ওপর তাদের প্রভাব বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

দুইটি পৃথক পদ্ধতিতে কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে—

একটিতে এআই ছোট ছোট রাসায়নিক ফ্র্যাগমেন্ট থেকে ওষুধ নকশা করে।
অন্যটিতে এআই-কে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নকশা করতে দেওয়া হয়।
বিবিসি জানায়, এই নতুন অ্যান্টিবায়োটিকগুলো প্রচলিত ওষুধের মতো নয় এবং মানবদেহে বিষাক্তও নয়। আলাদাভাবে পরীক্ষা করে ল্যাবরেটরিতে ব্যাকটেরিয়ার ওপর এবং সংক্রমিত ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। বর্তমানে ওষুধ প্রতিরোধী সংক্রমণ বিশ্বজুড়ে বছরে ১০ লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যুর কারণ। অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার ব্যাকটেরিয়াকে আরও শক্তিশালী করছে, ফলে অনেক প্রচলিত ওষুধ অকার্যকর হয়ে পড়ছে।

তবে এমআইটি গবেষক দল জানিয়েছে, এই ওষুধ এখনই বাজারে আসছে না। উন্নয়ন ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করতে কয়েক বছর সময় লাগবে। তারা আশা করছেন, এই উদ্ভাবন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের ক্ষেত্রে ‘দ্বিতীয় স্বর্ণযুগ’-এর সূচনা করতে পারে।

ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ড. অ্যান্ড্রু এডওয়ার্ডস বলেন, “এই গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নতুন অ্যান্টিবায়োটিক সনাক্ত করার এক অভিনব পদ্ধতি এটি।”

তবে তিনি সতর্ক করে দেন, “এআই ওষুধ আবিষ্কার ও উন্নয়নে বিপ্লব আনলেও, ওষুধের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা যাচাইয়ের প্রচলিত কঠোর ধাপগুলো অতিক্রম করতে হবে।”

সূত্র: বিবিসি